অহল্যাকে

আজ হেমন্ত।
মহানন্দা নদীর ঘাটে ফুটে আছে ঘেঁটু ফুল,
অনাদৃতা;
একটা তিতির পাখি তার অস্থির ডানায়
পড়ন্ত বিকেলের বিষণ্ণ কমলা মেখে পথ ভুল,
অতন্দ্রিতা;
নদীর জলে পা ডুবিয়ে একলা বসে, মেখলা, তোমার কোমর ছড়ানো চুল।
আজ তুমি বিবাহিতা;
আজ তোমার আয়ত দুটি চোখ কান্না ধুধুল।
ওগো অবহেলিতা,
তোমার চোখের ভাষা বোঝেনি যে জন
তোমাতে তবু তারই আজ পূর্ণ অধিকার।
.
সেদিন ছিল ফাল্গুন।
সেদিন তোমার নরম আঙুল ছুঁয়েছিল আমার আঙুল,
তবুও সেদিন অপরিচিতা;
দুরে সুকনার জঙ্গলে ঘরে ফেরা পাখিদের গান আর অজস্র কুরচি ফুল,
অনাঘ্রাতা;
সেই বিকেলে আমার চোখে মহানন্দা, তবু ওই চোখেতে স্বপ্ন বিপুল।
এই ঘাটে বসে তুমি, আমি, না-বলা-কথা আর
আঙুল ছোঁয়া মুখর নীরবতা;
তুমি বাগদত্তা, ব্যথিতা, ভীতা তবুও বুঝি বা প্রতীক্ষায়
অনাগত, অচেনা সে কার চোখের ভাষা পড়বার !
.
হেমন্তের হিমেল হাওয়া হয়ে আজ যদি কাছে আসি,
আবার যদি ভালবাসি
মেখলা, তোমার মেঘলা চুলে জড়াই যদি বন ধুতরো ফুল
এই সূর্য-নেভা-রাতে
জ্বালতে পারো প্রাণের প্রদীপ আমার সাথে?
হতে পারো কলঙ্কিতা?
আজ খরস্রোতা, ভাঙন-পিয়াসী মহানন্দার ঘাটে
ভাঙতে পারো তোমার মিথ্যে সাজানো সংসার?

8 thoughts on “অহল্যাকে

  1. Nairita

    Onekdin pore khub sundar ekta kobita porlam.. Opurbo.. Mon chhuye jaoa ar mon kemon kora kobita.. Khub sundar.. Aro lekhar opekhhai roilam

Leave a Reply