স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে কে বাঁচিতে চায় – লিখেছিলেন রঙ্গলাল। কিন্তু শিকাগোর বঙ্গসন্তানদের জন্য গানটা হবে, উত্তাপহীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে কে বাঁচিতে চায়! নয় কিনা বলুন?
বাইরে যখন ঋণাত্মক কুড়ি তখন বাইরে বেরোনো নিতান্ত বাহাদুরি। কিন্তু অফিস কাছারি? তার সাথে তো চলবে না জারিজুরি। অতএব সক্কাল সক্কাল মারকাটারি। অ্যাস্ট্রোনটের মত পোশাক পরে মুখ মাথা ঢেকে ছাড়তে হয় বাড়ি। তাই শীতবুড়ির সাথে বাঙালির চিরকালের আড়ি। কিন্তু ঋতু রকমারি। মহাকাল চালিয়ে দেয় তার গাড়ি। শীতের মুখে ছাই দিয়ে শিকাগো সামার আসে। কাঠবিড়ালি ঘুরে ফেরে বাড়ির আশেপাশে। একটা র্যাবিট খিল্লি করে চৌধুরীদের ঘাসে। জুলাই আগাস্ট মাসে, হাওয়ায় হাওয়ায় অনেক আদর ভাসে। সবুজ পাতার ঝালর ঝুলিয়ে বাকথর্ন গাছ হাসে। প্রচুর মজা প্রচুর ফান, প্রচুর হাসি প্রচুর গান – শিকাগো সামার সবাই ভালবাসে। গামবুট চিলেকোঠায় ওঠে, চপ্পলেরা নামে। যদিও শরীর একটু একটু ঘামে, তবুও যেন ছুটির চিঠি পৌঁছে যায়, ভোরেরবেলা, শিশির মাখা খামে। আনন্দধুন বাজতে থাকে সকাল, সন্ধ্যে কিম্বা মধ্যযামে। ইচ্ছে করে, এই গ্রীষ্মাবকাশ কক্ষনো না থামে।
হরজাই পাখি ডাকে। কোনো পথের বাঁকে, একটা দুটো ড্যান্ডিলিওন আপনি ফুটে থাকে। ফুলের টবে মাথা দোলায় পেটুনিয়া ঝাঁকে ঝাঁকে। শাসন করি, শাসন করি চঞ্চল মনটাকে। তবুও সেখান খুঁজে ফেরে আনন্দ ভোমরাকে। কখনো আবার আদুরে মেঘ আকাশটাকে ঢাকে। টুপুর টাপুর শাম্মি কাপুর বৃষ্টি হতে থাকে। আড্ডা বসে বন্ধুবাড়ির বৈঠকখানাতে। হরেকরকম খানাতে পিনাতে, জমতে থাকে সন্ধেবাসর পরতে পরতে। মধ্যরাতেও চলতে থাকে মিঠি মিঠি বাঁতে। টুকরোটাকরা স্মৃতিরা সব জমা পড়ে ফেসবুকিয় খাতে। পি এন পি সি চলতে থাকে আড্ডাতে আড্ডাতে। প্রেম বিরহ মিলন চলে তোমাতে আমাতে।
মোটের ওপর সামার ডে-তে, ছেলে-বুড়ো সব জনাতে আনন্দেতে মাতে।