বাবা, তুমি জানো, সান্টা রেড ড্রেস পরে? ভীষণ ভীষণ ভীষণ রেড..আর ব্ল্যাক শু পরে। আর ওর হোয়াইট বার্ড আছে। সানাই বলছিল।
আজ রাতে চিমনি পথে সান্টা নেমে আসবে। তার শুভ্র শ্বশ্রূ, শুভ্র কেশ। কাঁধে উপহারের প্রকাণ্ড ঝোলা আর মুখে প্রাণখোলা হো হো হাসি। আজ রাতে সান্টা ক্রিস্টমাস ট্রী-এর নীচে রেখে যাবে ক্রিস্টমাস প্রেজেন্ট। সানাই ঘুম থেকে উঠেই দৌড়ে চলে যাবে ক্রিস্টমাস ট্রী-এর কাছে। লাল সাদা গিফট্ র্যাপারে মোড়া উপহারগুলো দেখে নিয়ে পরের এক ঘন্টা থাকবে এক্সট্রা নাইস যতক্ষণ না গিফট্ খোলা হচ্ছে। যে জিনিসটা ও মাম্মার সামনে সান্টাকে উইশ করেছিল সেটা হয়তো বা পেয়ে যাবে। হয়তো বা পাবে না। সান্টাকে তো সমস্ত কিডদের গিফট দিতে হয়। তাই সব সময় উইশ মতন গিফট দিয়ে উঠতে পারে না। উইশ অনুযায়ী গিফট পাওয়া বা না পাওয়ার আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে চোখ। গিফট্ খোলা হয়ে গেলে উৎসাহে দু চারবার লাফিয়ে নেবে সানাই। চিনি ঢালা গলায় বার বার বলবে, থ্যাঙ্ক উ সান্টা। আই লাভ ইউ।
কয়েকটা বছর। ব্যাস আর কয়েকটা বছর শুধু থাকবে এই মধুর বিশ্বাস। বাইরের জলহাওয়া লাগলেই একদিন সন্দেহের বীজ প্রোথিত হবে। অবিশ্বাসের বীজ ধীরে ধীরে চারাগাছ হবে। তার পর বৃক্ষ মহীরুহ। বড় হয়ে ওঠা আসলে বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ারই নামান্তর। বড় হতে হতে হতে মাথা যখন আকাশ ছোঁয় তখন আর কিছু থাকে না যা পরম নির্ভরতা দেয়। কোনো দেওয়াল থাকে না যাতে হেলান দিয়ে দাঁড়ানো যায় বিকেলবেলায়, কোনো চৌকাঠ থাকে না যেখানে এসে দু দন্ড মুগ্ধচোখে বসে থাকা যায়, কোনো আকাশ থাকে না যার পানে চেয়ে যুক্তকরে চাওয়া যায় এক মুঠো নীল, কোনো কবিতা থাকে না যা গুঁড়ো গুঁড়ো চাঁদ হয়ে ভিজিয়ে দিয়ে যায় ঝুপুস, কোনো দ্রোহকালের স্বপ্ন থাকে না যা দৃপ্ত অঙ্গারের মত রোমে রোমে আগুন জ্বালায়। আমাদের সমগ্র জীবন, আমাদের সমগ্র যাপন আসলে একটা আলগোছে পড়ে থাকা পথ যা আমাদের নিয়ে যায় বিশ্বাসহীনতার অনন্ত রৌরবের প্রবেশদ্বারে।