বই প্রকাশঃ বনধুতরোর ফুল

এক বন্ধু বলছিল, তুমি তো এত ভাল গল্প লেখো, তবে কবিতার বই প্রকাশ করলে কেন? কবিতা তো কেউ পড়ে না। আমি বললাম, ধরো, যদি ঠিক সেই জন্যই। যাতে হ্যাজাকের সূর্যসম প্রভায় নরম কথাগুলো ঝলসে না যায়, যাতে জয়ী হওয়ার ইঁদুর দৌড়ে সামিল না হয়ে পরম সুখে পরাজিত হতে পারে আমার আত্মকথন, যাতে যুক্তিবাদী ও মস্তিষ্কসর্বস্ব মানুষের পরখ-করা-নখের নিষ্পেষণে রক্তাক্ত হতে না হয়, যাতে অষ্টমীর জগন্নাথ ঘাটের ফুলের বাজারে ফুলের মত মূল্য নির্ধারণ করার জন্য পাঠক ও পঠিতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি দরাদরি না হয়…

বইটি পাওয়া যাবে কবিতা আশ্রমের স্টল 252 তে। 6 নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে সোজা গিয়ে লাস্ট স্টল। এটিই বইমেলার শেষ সপ্তাহান্ত। যদি বন্ধুদের কেউ স্বপ্ন সাজাও, যদি বন্ধুদের কেউ বইমেলায় যাও, ঘুরে দেখো কবিতা আশ্রমের স্টলটি। এর বেশি মার্কেটিং আমি করতে জানি না। বরং একটা কবিতা দিই আমার সদ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ “বনধুতরোর ফুল” থেকে। এ বইয়ে আমার কথা লেখা আছে। হ্যাঁ এ আমারই কথা। কোনো পাতায় হয়তো বা ধরা আছে কোকিলকূজিত নয়ানজুলির চর, কোথাও বা পলাশ রাঙানো বনমর্মর, কোথায় আমার চোখে ধরা পড়া সন্ধে নামার ক্ষণ, কোথাও আমারই আহত হৃদয় ক্রন্দন।

অভিমান


তুমি আমার কসাইখানা দেখতে পেলে
খুঁজে পেলে আমার হর্ম্যপ্রাসাদ
তোমার চোখে চেয়ে দু দণ্ড বাসর জাগল আমার চিলেকোঠা ছাদ

কিন্তু আমার মরু প্রান্তরের সন্ধান পেলে না
আমার হাত ধরে ঝিনুকের দেশে গেলে না
সহস্র বছরের একটানা বর্ষার পর
শোনা যায় যে ঝিল্লী মর্মর
আমার বুকের মধ্যে তার ধ্বনি অনুক্ষণ
সুপ্রিয়ে, কান পেতে শুনো কোনো দিন…

মানুষ তো চিরকালই অবয়বহীন।

Leave a Reply