শরীর সমিধ

কতদূর থেকে আমি এই অব্যয় শরীর নিয়ে ভেসে ভেসে এসেছি তোমাদের সাগর সঙ্গমে। তোমাদের নগর কীর্তনে সং সেজে দু হাত তুলে ববম ববম নৃত্য করেছি। তারপর সমাচ্ছন্ন রাত্রি নদী বেয়ে মৃত শব্দদের ক্লান্তিকর সমাবেশে গেছি। আমাকে চার দিক থেকে আবহ সঙ্গীতের মত ছেঁকে ধরেছে অন্ধকার। সুখী বেড়ালেরা এসে শরীর ঘষেছে শরীরে। আহা কি নরম! আহা কি প্রমত্ত বেদনা! নীড় ভাঙা পাখিদের বিধুর সঙ্গীত আমি মজলিশি আড্ডায় বসে শুনেছি একাকী। ভীড় করে এসেছে সাপেরা। নীলের ছোবল আমি সানন্দে নিয়েছি জিভ পেতে। মহা তিমির অর্ণব সন্তরণ করে এসে আমি বেলাভূমিতে শরীর এলিয়ে দিয়েছি। নরম নক্ষত্রেরা আমার নির্মোক শরীর চেখে দেখেছে নেহাত কৌতূহলবশে। মধ্যযামে ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের সাথে রমণ করেছি আমি কত কত বার। পথের দিশারী বৃদ্ধ কাছিমেরা শুন্য দৃষ্টি মেলে লেহন করেছে আমার সবুজ। আমার সমস্ত আরব্ধ কর্ম সাঁত করে গিলে নিতে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে একটা অন্ধকার ব্যাঙ। প্রতিদিন ক্লিন্ন হচ্ছি। প্রতিদিন চুরি যাচ্ছে প্রত্যয়।

সন্ধেতারা জ্বলে ওঠা মরা বিকেলে তাই আমি ঝুমকোলতাদের মত ভীড় করে করছি আকণ্ঠ সূর্যপান। আমার শরীর জুড়ে শুষে নিচ্ছি কবেকার পুরাতন আলো। হে প্রেম, হে অপ্রেম, জ্বালো আমায় জ্বালো। প্রদীপের মত দীপ্ত করো আমার এই শরীর সমিধ।

Leave a Reply